শ্রীনগরে বৃষ্টিতে শ্রমজীবি মানুষ বিপাকে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:৩০ PM, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১

টানা বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজার হাজার কৃষি শ্রমিক শ্রম বিক্রি করতে না পেরে চরম বিপাকে পরেছেন। কৃষি মৌসুমে রংপুর, কুড়িগ্রাম, চাপাই নবাবগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বছরের এই সময়ে এই অঞ্চলে আলু, বোরো ধানসহ অন্যান্য কৃষি কাজের জন্য আসেন তারা। কয়েক মাসের জন্য এখানকার কৃষি কর্মযজ্ঞের বিভিন্ন কাজে শ্রম বিক্রির মাধ্যমেই আয় রুজি করে থাকেন। তবে গত দুই দিনের টানা বৃষ্টির কারণে খেটে খাওয়া নি¤œআয়ের মানুষগুলো তাদের শ্রম বিক্রি করতে পারছেন না। বিভিন্ন হাট বাজার ও রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে অর্ধ অনাহারে বেকার সময় পাড় করতে হচ্ছে তাদের। এর মধ্যে কাজ না মিলায় অনেকেই বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে সোমবার রাত পর্যন্ত এমন চিত্রই লক্ষ্য করা গেছে।

দেখা গেছে, দিন-রাত সমান তালে বৃষ্টি ঝড়ছে। উপজেলার চকবাজার, ডাকবাংলা মার্কেট, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের ছনবাড়িসহ বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ডে নি¤œআয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে কনকনে শীত উপেক্ষা করে বেকার সময় পার করতে। অনেকেই বিভিন্ন যাত্রী ছাউনী, দোকানপাট ও ওভারব্রিজের নিচে অবস্থান নিচ্ছেন। দল বেঁধে বাড়িতে ফিরার চেষ্টা করছেন অনেকে। এছাড়াও স্থানীয় হাট বাজারগুলোতে খালি দোকান ভাড়া করে ও চায়ের দোকানে টিভি দেখে সময় পাড় করছেন। লক্ষ্য করা গেছে, সন্ধ্যার দিকে মহাসড়কের ছনবাড়ি চৌরাস্তায় ওভারব্রিজের নিচে দল বেধে বাড়িতে ফিরার চেষ্টায় পরিবহনের খোঁজে অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকতে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, টানা বৃষ্টির কারণে মুন্সীগঞ্জ জেলার ৬টি উপলোয় আলু চাষীরা এখন দিশেহারা।

এ সময় রংপরের আমিরুল (৩০), মো. জাহিদ (২৪), ঠাকুরগাঁয়ের রঞ্জন দাস, আশিক হোসেন (৩৫), চাপাই নবাবগঞ্জের আকাশ (২৩), মানিক (৪০) সহ অনেকেই বলেন, বৃষ্টিতে শ্রম বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছেনা তাদের। বাধ্য হয়েই বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পানিতে ডুবে জমির যে অবস্থা এসব পনি নিস্কাশন ও ফের আলুর বীজ বপনের জন্য কৃষকের অন্তত দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। এতে করে নিজের খেয়ে থাকাটা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা। তাই বাড়িতে চলে যাবেন। বাসের টিকিট পেলে রাতেই বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। তাদের মত অনেকেই এখন বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলু, ধান, সবজি, সরিষাসহ বিভিন্ন আবাদি জমিতে এতোদিন কৃষি কাজ করে ব্যস্ত সময় পাড় করছিলেন শ্রমজীবি এসব মানুষ। টানা বৃষ্টির কারণে এখানকার কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গের পাশাপাশি কৃষি শ্রমিকরাও বেকার হয়ে যায়। আবহাওয়া অনুকুলে না আসা পর্যন্ত কৃষকের জমিতে চাষাবাদ করা সম্ভব হয়ে উঠবে না। আবাদি জমির পানি নিস্কাশন জরুরী হয়ে উঠেছে। এতে করে এখানকার কৃষিতে বিলম্বনায় পরতে হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কৃষি কাজে ফের মাঠে নামবেন শ্রমজীবি এসব মানুষ। অসময়ে হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে এই অঞ্চলের আলুর জমি, সবজি বাগান, বুরো বীজতলাসহ হাজার হাজার কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :