মুন্সীগঞ্জে জমির মালিকানা নিয়ে ধুম্রজাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৯:৪৫ PM, ০৭ জানুয়ারী ২০২৩

মুন্সীগঞ্জ সদরের মিরকাদিম পৌরসভার তিলারদিচর এলাকায় জমির মালিকানা নিয়ে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জমিটির মালিক কে এ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। সম্প্রতি জমিটিতে বালু ভরাট করা নিয়ে নতুন করে বিরোধ দেখা দিয়েছে।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের থানায় অভিযোগ ও আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিরকাদিম পৌরসভার তিলারদি মৌজার ৬টি দাগে মোট ২৯৩ শতাংশ জমি রয়েছে। জমিগুলোর মধ্যে ৫ জনের মালিকানা রয়েছে। মালিকরা হলেন, মহেন্দ্র চন্দ্র মন্ডল, রাখাল চন্দ্র বণিক (সাং- আব্দুল্লাহপুর), চান মোহণ বণিক, চন্দ্রনাথ বণিক, ভারতচন্দ্র বণিক। এই ৫ জনের মধ্যেই জমিটি সমানভাগে ভাগ করা রয়েছে।

সূত্রে আরও জানা যায়, সম্প্রতি এর মধ্যে ৬১ ও ৬২ দাগের জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। জমিটি দীর্ঘদিন রাখাল চন্দ্র বণিকের ওয়ারিশগণের ভোগদখলে ছিলো। একপর্যায়ে জমিটি হাতছাড়া হয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় সেকান্দর হোসেন গং এর কাছে জমিটি বিক্রি করে দেন ওয়ারিশরা। ক্রয়কৃত জমির মালিকরা বালু ফেলে জমিটি ভরাট করে। এর মধ্যে একটি পক্ষ আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা দায়ের করলে মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত।

এ বিষয়ে জমিটির মালিকপক্ষ সেকান্দর হোসেন বলেন, সিএস জোতের মালিক নিত্যনন্দন মন্ডলের কাছ থেকে ১৯৪২ সালে রাখাল চন্দ্র বণিক জমির কিছু অংশ কিনেন। যা এসএ ও আরএস রেকর্ডে বিদ্যমান রয়েছে।
পরবর্তীতে তার দুই ছেলে জগদীশ চন্দ্র বণিক ও রাধা গোবিন্দ বণিককে রেখে মারা যান।

এর মধ্যে জগদীশ চন্দ্র বণিক নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যান। তার ভাই রাধাগোবিন্দ বণিক দুই ছেলে আদিনাথ বণিক ও বিশ্বনাথ বণিককে রেখে পরলোকগমন করেন। পরবর্তীতে আদিনাথ বণিক ও বিশ্বনাথ বণিকের নামে আরএস রেকর্ড লিপিবদ্ধ হয়। তাদের কাছ থেকেই আমরা জমিটি ক্রয় করেছি। পরে আমরা জমিটিতে বালুভরাট করেছি। তিনি আরও বলেন, ২৯৩ শতাংশ জমির মধ্যে আমরা আদিনাথ ও বিশ্বনাথের ৫৭ শতাংশ জমি ভরাট করেছি। বাকি পুরো জমি খালি পড়ে আছে। খালি জমিতে না যেয়ে একটি পক্ষ ভরাটকৃত জমিতেই মালিকানা দাবি করছেন। কিন্তু পক্ষটি খালি জমিতে না যেয়ে আমাদের জমিতে ভাগ বসাতে চাইছে। তিনি বলেন, ৬টি দাগে সকলেই মালিক। তারাও জমি পাবেন, যেটা তাদের দখলে রয়েছে। কিন্তু তাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তির থেকেও বেশি তারা দখল করে রেখেছেন।

তিনি বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মাননীয় আদালত যদি পরবর্তীতে এ বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেন আমরা সেই মোতাবেক কাজ করবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট সুমন মিয়া জানান, জোতের ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে এসএ ও আর এস রেকর্ড এবং হালসন পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ রয়েছে আদিনাথ ও বিশ্বনাথের। একপর্যায়ে স্থানীয় জনৈক রতন চন্দ্র মন্ডল নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে মামলা করলে প্রথমে আদালত নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরবর্তীতে নিষেধাজ্ঞা খারিজ করে দেয়। যেখানে আদালত তার নিষেধাজ্ঞা খারিজ করে দেয় সেখানে অনাকাঙ্খিতভাবে এই পক্ষটি মিথ্যা দাবি করছে। এ বিষয়ে কয়েক দফায় মীমাংসার তারিখ নির্ধারণ করা হলেও ওই পক্ষটি আসেনি। এ ঘটনায় আদালতে দেওয়ানি মামলা চলমান রয়েছে।

এসব বিষয়ে জানতে রতন চন্দ্র মন্ডলের বাসায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর কয়েক দফায় ফোনে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

আপনার মতামত লিখুন :